Nursery

ঘরের আভ্যন্তরীন বাগানের পরিচর্যা

যেহেতু ইনডোর প্লান্ট ঘরের ভেতরে থাকে, তাই বাগানে বেড়ে ওঠা গাছের চেয়ে পরিচর্যায় অনেকটাই তফাত রয়েছে:
ঘরের কোণে একটু সবুজের ছোঁয়া কার না ভাল লাগে? শহরের বুকে জায়গার অভাবে অনেকেরই বাগান করার শখ মেটাতে ঘরের ভিতর বা ব্যালকনিই ভরসা। এখন নানা ধরনের ইনডোর প্লান্ট পাওয়া যায়। তবে ইনডোর প্লান্ট ভাল রাখার জন্য সঠিক পরিচর্যাও জরুরি। যেহেতু ইনডোর প্লান্ট ঘরের ভেতরে থাকে, তাই বাগানে বেড়ে ওঠা গাছ আর ইনডোর প্লান্টের পরিচর্যার মধ্যে অনেকটাই তফাত রয়েছে।

রইলো জরুরি কয়েকটি পরামর্শ:
১. গাছে নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি দিন। অতিরিক্ত পানি কিন্তু গাছের ক্ষতি করে। খেয়াল রাখুন, সারারাত গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে। এতে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। গাছে প্রতিদিন পানি না দিলেও চলবে। আপনাকে বুঝতে হবে গাছে পানির প্রয়োজন আছে কিনা। গাছে পানি দেওয়ার আগে হাত দিয়ে মাটি চেপে চেপে দেখুন। ভিজে ভাব থাকলে পানি দেওয়ার দরকার নেই। গাছে পানি দেওয়ার আদর্শ সময় ভোরবেলা ও বিকেলে। কারণ এই সময় রোদের তেজ কম থাকে। গরমকালে গাছে বেশি পানি দেবেন, শীতকালে কম পানি দেবেন। ধীরেধীরে পানি দিন। খেয়াল রাখবেন টবের মাটি একেবারে যেন শুকিয়ে না যায়।

২. যে ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করে সেরকম জায়গায় গাছ রাখুন। খুব অন্ধকার ঘর কিংবা যেখানে খুব রোদ আসে সেখানে গাছ রাখবেন না। গাছের নতুন চারা অবশ্যই বারান্দায় বা যেখানে আলো-বাতাস আসে, সেখানে রাখুন। এতে চারা ঠিকমতো বাড়বে এবং গাছে ফাংগাসও হবে না।

৩. যে ঘরে এসি চলে বা রুম টেম্পারেচার ঘনঘন বদলে যায়, সেরকম ঘরে গাছ না রাখাই ভাল। এতে সহজে গাছের পাতা ঝরে পড়ে যায়।

৪. গাছ অতিরিক্ত রোদ পেলে অনেকসময় পাতার সামনের অংশ শুকিয়ে কুঁকড়ে যায়। এছাড়া গাছের ফুল বা পাতার রঙ হালকা হয়ে যেতে পারে। এরকম হলে গাছ সরাসরি রোদে না রেখে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় সরিয়ে রাখুন।

৫. অনেকসময় বেশি সার দেওয়ার ফলে গাছের চারা খুব তাড়াতাড়ি বাড়লেও কাণ্ড হলুদ হয়ে যায় এবং হঠাৎ করে গাছ নেতিয়ে পড়ে। এরকম ক্ষেত্রে কয়েকঘণ্টায় বেশ অনেকটা পানি গাছের গোড়ায় দিন। সার ধুয়ে বেরিয়ে গেলে সমস্যা মিটবে।

৬. খেয়াল রাখুন, ঝরে পড়া ফুল, শুকনো পাতা টবের মধ্যে যেন জমে না থাকে। টব সবসময় পরিষ্কার রাখুন। এতে গাছ ভাল থাকবে।

৭. গাছের পাতায় ঘরের ধুলোময়লা, ধুলো বা ঝুল জমলে শুকনো সুতির নরম কাপড় বা স্পাঞ্জ দিয়ে হালকা হাতে পাতাগুলো মুছে দিন। গাছে ছোটছোট অনেক পাতা থাকলে স্প্রে বোতলে পানি ভরে স্প্রে করে পরিষ্কার করুন।

৮. একসঙ্গে অনেক গাছ পরিষ্কার করতে চাইলে শাওয়ারের তলায় গাছগুলো রাখুন। তবে পরিষ্কার করার আগে গাছের গোড়ার অংশ ও তার চারদিক প্লাস্টিক দিয়ে র‌্যাপ করে নিন। নাহলে গাছের মাটি ধুয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

৯. মাটি ভিজে থাকতে থাকতে লিক্যুইড প্লান্ট ফুড দিন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্লান্ট ফুড দেবেন না। গাছের পক্ষে তা ক্ষতিকারক। নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশ রয়েছে এরকম লিকুইড প্লান্ট ফুডই ইনডোর প্লান্টের জন্যে আদর্শ।

১০. গাছকে পোকামাকড়ের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে জলে অ্যাসপিরিন জাতীয় ট্যাবলেট গুঁড়ো করে মিশিয়ে দিন। অ্যাসপিরিনের স্যালিসিটিক অ্যাসিড গাছের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। এই মিশ্রণ স্প্রে বোতলে ভরে গাছের পাতায় মাঝেমধ্যে স্প্রে করে দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *